মা


maআজ ” মা ” দিবস ।
“মা” কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু যেন ভাই ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রি ভূবনে নাই।

মা কে নিয়ে কি লিখব ? আবার মা কে নিয়ে কি লিখার নাই ?। ভাবটা এমন মাকে নিয়ে আবার লেখার কি আছে। অনেকটা মামার কাছে নানার বাড়ির গল্প বলার মত।  তবুও মনে হল কিছু লিখি।  জন্মের পর প্রথম শেখা শব্দ হচ্ছে “মা”। এই “মা” শব্দটি শিশুকে কি শিখিয়ে দিতে হয় ? আমার মনে হয় না। মা মা মা....

রাসূল (সাঃ) হতে বর্ণিত, একদা এক ব্যাক্তি  রাসূল (সাঃ) জিজ্ঞাস করেছিল

“ আমার উপর কার অধিকার সবচেয়েও বেশি। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন তোমার মা এর উপর,তারপর কার উপর উত্তরে তিনি বলেন তোমার মা এর উপর, লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলেন তারপর কার উপর? উত্তরে রাসূল (সাঃ) বলেন, তোমার মা এর উপর, চতুর্থ বার লোকটি জিজ্ঞেস করলে রাসূল (সাঃ) বলেন, অতঃপর তোমার বাবা”।
(সহীহ বুখারি ও মুসলিম)।।

মায়ের কথা বলতে গেলে বুকের ভেতর কেমন যেন করে উঠে। কিন্তু মায়ের কথায় এমন কেন লাগে আমি জানিনা। এটা যদি আবেগ হয় সে জন্য আমি গর্বিত যে আমি আমার মাকে ভীষন ভালবাসি।
ভাবতে অবাক লাগে ২৫ টা বছর পার হয়ে গেছে জীবন থেকে । আমি আজ অনেক বড় হয়েছি , তবু আমি আমার মায়ের কাছে আজও সেই ছোট্ট শিশুই রয়ে গেছি । এই দুনিয়ায় কি এমন কেও আছে যে আজো আমার স্বার্থের কাছে নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিবে? আমি জানি আছে … আর সে হলেন আমার মা । যে মা নিজে না খেয়ে আমাকে খাইয়েছে । যে মা নিজে না ঘুমিয়ে সারারাত জেগে থেকেছে যেন গরমে তার সন্তানের  ঘুম না ভাঙ্গে । অসুখ হলে নিজের বুকের ভেতর লুকিয়ে রেখেছে আর  খোদার কাছে বলেছে অসুখ দিলে যেন তাকে দেয়া হয় কিন্তু সন্তান কে নয় । নিজে না খেয়ে যে আমাকে খাইয়েছে।  নিজে না খেয়ে আমাকে খাইয়েছেন আর কোনদিন বুঝতেও দেননি নিজের এই ত্যাগের কথা।

রাসূল (সা:) বলেছেনঃ বেহেশ্ত হচ্ছে মায়ের পায়ের নিচে।
                                          ( কানযুল উম্মালঃ ৪৫৪৩৯, মুনতাখাবে মিযানুল হিকমাহঃ ৬১৪ )

মা হলো খোদার পক্ষ থেকে মানুষের জন্য শ্রেষ্ঠ নিয়ামত ।  একজনের  টাকা-পয়সা নাই, বাড়ি-গাড়ী নাই কিন্তু মা আছেন । মনে করে দেখ সেই মানুষের কথা যার মা নাই ।  পৃথিবীতে সেই দরিদ্র যার মা আছে কিন্তু মায়ের মর্যাদা জানেনা। সেই পৃথিবীতে সবচেয়ে অভাগা, পাপী এবং অভিশপ্ত যাকে খোদা মা দিয়েছেন কিন্তু মায়ের মূল্য বোঝার ক্ষমতা দেননি।

“মা একটা খুব ই ছোট শব্দ। মাত্র একটা অক্ষর লাগে লিখতে। তবে মানব জীবনে এর ভুমিকা অনেক।

এক ব্যক্তি নবীজীর (সা:) কাছে এসে বলল, আমি আল্লাহর কাছে সওয়াবের আশায় আপনার হাতে হিজরত ও জিহাদের ব্যাপারে শপথ করছি। নবীজী স. বললেন, তোমার পিতা-মাতার কোনো একজন ‌জীবীত নাকি? লোকটা বলল,হ্যাঁ, বরং উভয়ই। তিনি বললেন, তুমি তো আল্লাহর কাছে সওয়াব আশা করো। লোকটা বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে তোমার পিতা-মাতার কাছে ফিরে যাও এবং তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করো। – মুসলিম

আসুন মা এর সম্মান নিয়ে হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) এর ঘটনা পড়ি।

একদিন হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) রাসুল (সাঃ) এর নিকট এসে কাঁদছেন। রাসুল (সাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আবু হোরায়রা তুমি কেন কাঁদছ? আবু হোরায়রা বললেন, আমার মা আমাকে মেরেছেন। রাসুল (সাঃ) বললেন, কেন তুমি কি কোন বেয়াদবী করেছ? আবু হোরায়রা বললেন, না হুজুর কোন বেয়াদবী করিনি। আপনার দরবার হতে বাড়ি যেতে আমার রাত হয়েছিল বিধায় আমার মা আমাকে দেরির কারণ জিজ্ঞেস করায় আমি আপনার কথা বললাম। আর আপনার কথা শুনে মা রাগে আমাকে মারধর করল আর বলল, হয়ত আমার বাড়ি ছাড়বি আর না হয় মুহাম্মদ (সাঃ) এর দরবার ছাড়বি। আমি বললাম, ও আমার মা। তুমি বুড়ি মানুষ। তোমার গায়ে যত শক্তি আছে তত শক্তি দিয়ে মারতে থাকো। মারতে মারতে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দাও। তবুও আমি আমার রাসুলকে ছাড়তে পারবো না। তখন রাসূল (সাঃ) বলেছেন, তোমার মা তোমাকে বের করে দিয়েছেন আর এজন্য আমার কাছে নালিশ করতে এসেছ? আমার তো এখানে কিছুই করার নেই। হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বললেন, হে রাসূল (সাঃ) আমি আমার মায়ের জন্য এখানে নালিশ করতে আসি নাই। রাসুল (সাঃ) বললেন, তাহলে কেন এসেছ? আবু হোরায়রা বললেন, আমি জানি আপনি আল্লাহর নবী। আপনি যদি হাত উঠিয়ে আমার মায়ের জন্য দোয়া করতেন, যাতে আমার মাকে যেন আল্লাহ হেদায়েত করেন। আর তখনই সাথে সাথে রাসুল (সাঃ) হাত উঠিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! আমি দোয়া করি আপনি আবু হোরায়রার আম্মাকে হেদায়েত করে দেন।” রাসুল (সাঃ) দোয়া করলেন আর আবু হোরায়রা বাড়ির দিকে দৌড়ে যাচ্ছেন। পিছন থেকে কয়েকজন লোক আবু হোরায়রার জামা টেনে ধরল এবং বললো, হে আবু হোরায়রা! তুমি দৌড়াচ্ছ কেন? তখন আবু হোরায়রা বললেন, ওহে সাহাবীগণ তোমরা আমার জামা ছেড়ে দাও। আমাকে দৌড়াতে দাও। আমি দৌড়াইয়া বাড়িতে গিয়ে দেখতে চাই আমি আগে পৌঁছলাম নাকি আমার নবীজির দোয়া আগে পৌঁছে গেছে। হযরত আবু হোরায়রা দরজায় নক করতে লাগলো। ভিতর থেকে তার মা যখন দরজা খুললো তখন আবু হোরায়রা দেখলেন তার মার সাদা চুল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে। তখন মা আমাকে বললেন, হে আবু হোরায়রা! তোমাকে মারার পর আমি বড় অনুতপ্ত হয়েছি, অনুশোচনা করেছি। মনে মনে ভাবলাম আমার ছেলে তো কোন খারাপ জায়গায় যায়নি। কেন তাকে মারলাম? আমি বরং লজ্জায় পড়েছি তোমাকে মেরে। হে আবু হোরায়রা! আমি গোসল করেছি। আমাকে তাড়াতাড়ি রাসুল (সাঃ) এর দরবারে নিয়ে চল। আর তখনই সাথে সাথে আবু হোরায়রা তার মাকে রাসুল (সাঃ) এর দরবারে নিয়ে গেলেন। আর তার মাকে সেখানেই কালিমা পাঠ করে মুসলমান হয়ে গেলেন ।।

About Sarwaria

All Time RaveNous S _is for self respect,a solid score here. A_is for able, for you surely are. R_is for romp, you know how to have fun! W_is for warmth, the glow of your friendship. A_is for advantage, for you are blessed with many. R_is for rational, the way you think.
This entry was posted in ত্রিশাল, বাদামিয়া, মাওলানা আব্দুল জব্বার সরকার সাহেবের বাড়ী, ময়মনসিংহ and tagged , , , , , , . Bookmark the permalink.

Leave a comment