মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, যারা আমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে পরস্পরকে ভালবাসে, আমার উদ্দেশে সমাবেশে মিলিত হয়, আমার উদ্দেশে পরস্পরে সাক্ষাৎ করে এবং আমার উদ্দেশ্যেই নিজেদের মাল-সম্পদ ব্যয় করে, আমার ভালবাসা তাদের জন্য অবধারিত’ (মালেক, মিশকাত হা/৫০১১)।
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই, সে তার উপর যুলুম করবে না এবং তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবেন না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তার প্রয়োজনে সাহায্য করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দুঃখ-কষ্ট দূর করবে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তার বিপদ দূর করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ- ত্রুটি ঢেকে রাখবে, আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৫৮)।
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দু’টি কন্যার লালন-পালন করবে তাদের পূর্ণ বয়স্কা হওয়া পর্যন্ত, ক্বিয়ামতের দিন সে আমার সাথে এভাবে আসবে। এ বলে তিনি নিজের আঙ্গুলসমূহ একত্রিত করে দেখালেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৫০)।
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট মর্যাদায় সেই ব্যক্তিই মন্দ বলে সাব্যস্ত হবে, যার অনিষ্টের ভয়ে লোকেরা তাকে ত্যাগ করেছে’। অপর এক বর্ণনায় আছে, ‘যার অশ্লীলতার ভয়ে লোকেরা তাকে পরিত্যাগ করেছে’ (বুখারী, মুসলিম, বাংলা মিশকাত হা/৪৬১৮)।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হল, কোন জিনিস মানুষকে সবচেয়ে বেশী জান্নাতে প্রবেশ করাবে? তিনি বলেন, তা হচ্ছে- আল্লাহভীতি ও উত্তম চরিত্র। আর জিজ্ঞেস করা হল, মানুষকে কোন জিনিস সবচেয়ে বেশী জাহান্নামে প্রবেশ করাবে? তিনি বললেন, তা হচ্ছে- মুখ বা জিহ্বা ও অপরটি লজ্জাস্থান’ (তিরমিযী, বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৬২১, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, মানুষকে জাহান্নামে প্রবেশ করানোর সবচেয়ে বড় মাধ্যম হচ্ছে জিহ্বা। কারণ জিহ্বা দ্বারা মানুষ সত্যকে মিথ্যা ও মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করতে পারে। এর কারণে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সমাজে বিশৃংখলা, অশান্তি, অরাজকতা ও নৈরাজ্য নেমে আসে। এজন্য জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করা যরূরী।
আমীরুল মুমিনীন উমার ইবন আল-খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি- “সমস্ত কাজের ফলাফল নির্ভর করে নিয়্যতের উপর, আর প্রত্যেক ব্যক্তি যা নিয়্যত করেছে, তাই পাবে। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের জন্য হিজরত করেছে, তার হিজরত আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের দিকে হয়েছে, আর যার হিজরত দুনিয়া (পার্থিব বস্তু) আহরণ করার জন্য অথবা মহিলাকে বিয়ে করার জন্য তার হিজরত সে জন্য বিবেচিত হবে যে জন্য সে হিজরত করেছে।”[সহীহ্ আল-বুখারীঃ ১, সহীহ্ মুসলিমঃ ১৯০৭। মুহাদ্দিসগণের দুই ইমাম আবু আব্দুল্লাহ্ মুহাম্মাদ ইব্ন ইসমাঈল ইব্ন ইব্রাহীম ইব্ন মুগীরা ইব্ন বারদেযবাহ্ আল-বুখারী এবং আবুল হাসান মুসলিম ইব্ন হাজ্জাজ ইব্ন মুসলিম আল-কুশায়রী আন্-নিশাপুরী আপন আপন সহীহ্ গ্রন্থে উল্লেখিত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যা সবচেয়ে সহীহ্ গ্রন্থদ্বয় বলে বিবেচিত হয়।]
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ